Header Ads

Header ADS

কবরই আসল ঠিকানা


কবরই আসল ঠিকানা


কবরই আসল ঠিকানা



আল্লাহ পাক বলেন প্রত্যেক জীবকেই মরতে হবে আর এ মৃত্যু এমন এক বাস্তব সত্য, যা অস্বীকার করার উপায় নেই। আপনি পৃথিবীতে এমনও লোক পাবেন, যারা কুরআন অস্বীকার করেছে, এমন অসংখ্য লোকও পাবেন যারা নবী- রসূলগণকে অস্বীকার করেছে, এমনও লোক আছে, যারা আল্লাহকে মানে না, বেহেশত মানে না, দোযখ মানে না। কিন্তু এমন কাউকে পাবেন না, যে মৃত্যুকে অস্বীকার করেছে। এ তো এমন এক বাস্তব সত্য, যা প্রতিদিন আমাদের আশপাশে সংঘটিত হচ্ছে। আমাদের চোখ এসবের সত্যতা দিন রাত প্রত্যক্ষ করছে।
মৃত্যু এমন এক সত্য, যা অস্বীকার করা সম্ভব নয়। দেখুন নাস্তিকরা অহরহ সন্ধান করছে কীভাবে মৃত্যু থেকে বাঁচা যায়। কোনো বিজ্ঞানী আজ পর্যন্ত শত চেষ্টা করেও মৃত্যু থেকে বাঁচার কোনো পথ আবিষ্কার করতে পারেনি আর পারবেও না ।

আরে ভাই, মৃত্যু আসবে এ তো বাস্তব সত্য । আল্লাহ পাক ইরশাদ ফরমান
كُلُّ نَفْسٍ ذَابِقَةُ الْمَوْتِ
“প্রত্যেক জীবই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে।”
এই একটি আয়াতই আমাদের অন্তরাত্মা কাপিয়ে দেয়ার জন্য যথেষ্ট। মৃত্যু আমাদের সবচেয়ে সুন্দর জীবনের সমাপ্তি টানবে। এ পৃথিবীর প্রতি দৃষ্টি দিলে মনে হয় মৃত্যুর কথা কারও মনে হয় না। সবাই যেন দুনিয়া নিয়েই ব্যস্ত। তাদের ফুরসতই নেই মৃত্যু নিয়ে চিন্তা করার ।
আমরা টাকার পিছে ছুটছি, ধন-সম্পদ জমা করছি, বড় বড় দালান কোঠা বানাচ্ছি। অস্থায়ী দুনিয়াতে স্থায়ী বাসস্থান গড়ার কল্পনা করছি। মৃত্যুর কথা আমাদের মনেই পড়ে না । আল্লাহ পাক ইরশাদ ফরমান—
أيْنَ مَا تَكُونُوا يُدْرِكَكُمُ الْمَوْتُ وَلَوْ كُنْتُمْ فِي بُرُوج مُشَيَّدَةٍ
“তোমরা যেখানেই থাকবে, মৃত্যু এসে তোমাদের ধরবে- যদিও তোমরা সুদৃঢ় দুর্গসমূহে থাক ।” [সূরা নিসা-৭৮]
অর্থাৎ মানুষ মৃত্যু থেকে বাঁচার জন্য যত শক্তিশালী দুর্গের ভিতর নিজেকে আবদ্ধ রাখুক না কেন, মৃত্যু কোনো অবস্থাতেই তার পিছু ছাড়বে না। কেননা সবার জন্যই মৃত্যুর সময় নির্ধারিত। এর থেকে বাঁচার কোনো উপায় নেই ।
আমরা যদি মরেই শেষ হয়ে যেতাম, তাহলে তো কোনো কথাই ছিল না, ব্যাপারটা কত সহজ ছিল। সুতরাং কবরে যদি আল্লাহ পাক পুনরায় জীবন দান না করতেন তাহলে তো ব্যাপারটা কতইনা সহজ ছিল। কিন্তু আসল বিপদ তো হলো মৃত্যু । আর মৃত্যু তো প্রকৃতপক্ষে মৃত্যু নয়, মৃত্যুর পর পুনরায় জীবন দান । যদি কেউ নাফরমান হয়ে মৃত্যুবরণ করে, তাহলে শেষ বিচারের দিন তার জন্য অপেক্ষা করছে ভয়ঙ্কর পরিণতি। কিন্তু যদি কিছু সম্বল সাথে নেয়া যায় তাহলে পরকালীন জীবনটা বড় সুন্দর জীবন হবে। প্রকৃতপক্ষে পরকালের সুখ বা দুঃখ কবর থেকেই শুরু হয়ে যায় ।
ভাই! পরকালীন জীবন কবর থেকে শুরু হবে। আর এ জীবনের কোনো শেষ নেই । এর সমাপ্তি বলতে কিছুই নেই। আর এ পৃথিবী অনেক দ্রুততার সাথে তার চূড়ান্ত পরিণতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
من مات فقد وقع قيامته.
“যে মরে গেল তার কেয়ামত তো শুরুই হয়ে গেল।”

এই পৃথিবীও একদিন শেষ হয়ে যাবে, ধ্বংস হয়ে যাবে এর সবকিছু। আর তা খুবই সন্নিকটে। মহাপ্রলয়ের দিন পৃথিবী ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাবে। কেয়ামতের ভয়াবহতা মানুষকে অসহায় করে দেবে। আশ্রয়হীন এবং দুর্বল করে দেবে ।
কাউকে যখন সাড়ে তিন হাত কবরের চার দেয়ালের মাঝে আবদ্ধ করে দেয়া হবে, তখন সে ভয়ে চিৎকার করে কাঁদতে চাইবে; কিন্তু পারবে না। কিছু বলতে চাইবে, কিন্তু বলতেও পারবে না ।
মৃত ব্যক্তিকে কবরের দিকে নিয়ে যাওয়ার সময় সে বলতে থাকে, ‘আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছ?' কবরে নামানো হলে সে বলতে থাকে, ‘আমাকে এই অন্ধকার কবরে একাকী রেখে যেও না।' সেদিন মানুষের সব ইচ্ছা খতম হয়ে যাবে। মৃত্যু আশা আকাঙ্ক্ষাকে শেষ করে দেবে।
ভাইসব! আমরা মৃত্যুর মাধ্যমে এই পৃথিবীর তামাশা শেষ করে পরকালের জীবনে উপস্থিত হব। আজ আমরা ছোট-খাট বিষয়াবলি নিয়ে কতই না মহাব্যস্ত। মৃত্যু কী জিনিস আমরা কি কখনো চিন্তা করেছি? আমরা মরে যাব, পৃথিবী ধ্বংস হয়ে হবে অথচ আমরা সে ব্যাপারে বে-খবরই থাকব, কিছুই করব না?!
সে দিনটি কেমন হবে যেদিন বিছানা হবে শুধু মাটির, বালিশও হবে মাটির? কেমন অনুভূত হবে তখন? আজ আমাদের ঘরে বৈদ্যুতিক বাল্ব ফিউজ হয়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গে নতুন বাল্ব লাগাই। কিন্তু কবরে কেমন অবস্থা হবে যখন অন্ধকারে মানুষ বিচলিত হতে থাকবে? আজ দুনিয়াতে আমরা কলিংবেল বাজালে খাদেম এসে পড়ে, কাজ করে দেয়। ঐদিন আমাদের অবস্থা কেমন হবে যখন না থাকবে কোনো চাকর-বাকর। না কেউ আমাদের কথা শুনতে পাবে, না আমরা কারও কথা শুনতে পাব। আজ শরীরে ময়লা লাগলে ধুয়ে ফেলি। সেদিন কেমন হবে যেদিন আমাদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ পচে গলে কিড়ায় কিড়ায় সমস্ত শরীর ছেয়ে যাবে? আজ আমরা কত সুন্দর করে শরীর, হাত, পা, মুখ পরিপাটি করে রাখি। চোখে সুরমা লাগাই, চুলে শ্যাম্পু ব্যবহার করি, দামি সেন্ট ব্যবহার করি । সেদিন কেমন
হবে। হায়!
একটু চিন্তা করে দেখুন তো সে দিনটির কথা, যেদিন আমার এ শরীর, এ মুখমণ্ডল, এ হাত, এ সুন্দর চোখ পোকা-মাকড়ে খেতে থাকবে ।
প্রিয় ভাই ও বোনেরা !
আমরা কি এভাবেই চলব? ভয়ঙ্কর সে পরিণতির কথা আমরা কি কখনো ভেবে দেখি? আমরা কি পাপযুক্ত শরীরটাকে পোকা মাকড়ের খাদ্য বানিয়ে কবরে নিয়ে যাব? আল্লাহ পাক ইরশাদ ফরমান জারি করেন 
أَفَحَسِبْتُمْ أَنَّمَا خَلَقْنَكُمْ عَبَثًا وَأَنَّكُمْ إِلَيْنَا لَا تُرْجَعُونَ
“তবে কি তোমরা মনে করেছিলে যে, আমি তোমাদের অনর্থক সৃষ্টি করেছি এবং
তোমরা আমার নিকট প্রত্যাবর্তিত হবে না?”[সূরা মুমিনূন-১১৫]
مَا يَلْفِظُ مِنْ قَوْلٍ إِلَّا لَدَيْهِ رَقِيبٌ عَتِيدٌ
“সে যে কোনো কথাই উচ্চারণ করে, (তা লিপিবদ্ধ করার জন্য) তার নিকট থাকে এক প্রস্তুত প্রহরী।” [সূরা কাফ-১৮]
أمْ يَحْسَبُونَ أَنَّا لَا نَسْمَعُ سِرَّهُمْ وَنَجُوهُمْ بَلَى وَرُسُلُنَا لَدَيْهِمْ يَكْتُبُونَ
“ওরা কি মনে করে যে, আমি ওদের গোপন কথা শলা-পরামর্শ জানি না? কেন জানব না, অথচ আমার প্রেরিত ফেরেশতারা ওদের নিকট (অবস্থান করে সব কিছু) লিখতে থাকে।” (সূরা যুখরুফ-৮০}
يَعْلَمُ خَابِنَةَ الْأَعْيُنِ وَمَا تُخْفِي الصُّدُورُ
“তিনি জানেন চোখের চুরি এবং অন্তরে যা কিছু গোপন আছে।” [সূরা মুমিন-১৯] তারপর আল্লাহ পাক ইরশাদ ফরমান—
وَمَا خَلَقْنَا السَّمَاءَ وَالْأَرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَا لِعِبِينَ
“আমি আসমান, জমিন এবং এ দুয়ের মাঝখানে যা রয়েছে, তা খেলাচ্ছলে সৃষ্টি
করিনি।” [সূরা আম্বিয়া-১৬]
لَوْ أَرَدْنَا أَن نَّتَّخِذَ لَهْوًا لَّاتَّخَذْنَهُ مِنْ لَدُنَّا إِنْ كُنَّا فَعِلِينَ
“আমি যদি খেল-তামাশা করতে চাইতাম, তবে নিজের কাছ থেকেই তার ব্যবস্থ
করতাম- যদি আমাকে (তা) করতেই হত।” [সূরা আম্বিয়া-১৭]



আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে সহি ভাবে আমল করার তৌফিক দান করুন। আমিন। বিষয়টি শেয়ার করে আপনিও সওয়াবের অংশীদার হতে পারেন। 💗Thank you watching this💗

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.