Header Ads

Header ADS

মাসজিদে দ্বিতীয় জামাআত; শরীয়ত কী বলে?

মাসজিদে দ্বিতীয় জামাআত;
             শরীয়ত কী বলে?
     -------------------------------------------
ইমাম মুয়াযযিন নির্ধারিত আছে এবং আযান ইকামতের সাথে নামায আদায় করা হয়, এরকম মাসজিদে নতুন করে আযান ইকামত দিয়ে জামাআত করে নামায আদায় করা মাকরূহ তাহরীমী।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে জামাআত হয়ে যাওয়ার পরে পুনরায় সেখানে জামাআতে সাথে নামায আদায় না করে বাড়িতে গিয়ে নামায আদায় করেছেন।
عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي بَكْرَةَ، عَنْ أَبِيهِ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «أَقْبَلَ مِنْ نَوَاحِي الْمَدِينَةِ يُرِيدُ الصَّلَاةَ، فَوَجَدَ النَّاسَ قَدْ صَلَّوْا، فَمَالَ إِلَى مَنْزِلِهِ، فَجَمَعَ أَهْلَهَ، فَصَلَّى بِهِمْ»
অর্থ: হযরত আবু বাকরাহ রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার মদিনার আশেপাশে (কোথাও কোন কাজে গিয়েছিলেন সেখান ) থেকে নামাযের উদ্দেশ্যে এসে দেখলেন, লোকেরা নামায আদায় করে ফেলেছে। তখন তিনি বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সদস্যদের কে নিয়ে জামাআতের সাথে নামায আদায় করলেন।
( আল মুজামুল আওসাত, ৫/৩৫ হাদীস নম্বর: ৪৬০১, হাদীসটি মাজমাউয যাওয়ায়েদ কিতাবেও উল্লেখ রয়েছে। খন্ড: ২ পৃষ্ঠা: ৪৫, হাদীস নম্বর: ২১৭৭ )
সাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম আজমাঈন কোন মসজিদে জামাআতের সাথে নামায হয়ে গেলে দ্বিতীয় বার জামাআতের সাথে নামায আদায় করতেন না।
روي عن انس رضي الله تعالى عنه ان اصحاب رسول الله صلى الله عليه وسلم كانوا اذا فاتتهم الجماعة في المسجد صلوا في المسجد فرادي
অর্থ: হযরত আনাস রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু থেকে বর্ণিত, সাহাবায়ে করামের যখন মসজিদে জামাআত ছুটে যেতো, তখন তারা মসজিদে একাকী নামায আদায় করতেন। (দ্বিতীয় জামাআত করতেন না)।
( রদ্দুল মুহতার, ১/৩৯৫ )
অতএব কখনও জামাআতে শরিক হতে না পারলে, তার জন্য উত্তম হলো একাকী নামায আদায় করা। মাবসূত কিতাবে উল্লেখ রয়েছে:
 واذا دخل القوم مسجدا قد صلى فيه اهله كرهت لهم ان يصلوا جماعة باذان واقامة ولكنهم يصلون وحدانا بغير اذان ولا اقامة
অর্থ: যখন লোকেরা এমন মসজিদে প্রবেশ করবে যেখানকার বাসিন্দারা (জামাআতের সাথে) নামায আদায় করে ফেলেছে। আমি তাদের জন্য জামাআতের সাথে আযান ইকামত দিয়ে নামায পড়া মাকরূহ মনে করি। এমতাবস্থায় তারা একাকী নামায পড়বে, আযান ইকামত ছাড়াই।
(মাবসূত, ১/১৩৫)
বিশেষ দ্রষ্টব্য: ------------------------------------
তবে কয়েকটি অবস্থায় দ্বিতীয় জামাআতের হুকুম ব্যতিক্রম রয়েছে :  
১) স্থান পরিবর্তন করে, মেহরাব থেকে সরে, নতুন আযান ইকামত না দিয়ে জামাআতে নামায আদায় করার ব্যাপারে বিভিন্ন মতামত রয়েছে, তবে গ্রহণযোগ্য কথা হলো, মাকরূহে তানযীহী হবে।
(ফতোওয়ায়ে শামী, ১/৫৫২, ফতোয়ায়ে মাহমূদিয়া, ৭/১১৯)
ومقتضى هذا الاستدلال كراهة التكرار في مسجد المحلة ولو بدون اذان ...(ردالمحتار٥٥٢/١)
২) যে সকল মসজিদের ইমাম মুয়াযযিন নির্ধারিত নেই সে সমস্ত মসজিদে দ্বিতীয় জামাআত মাকরূহ হবে না।যেমন- রাস্তা বা হাট-বাজারের মাসজিদ। 
(বাদায়েউস সানায়ে' ১/১৫৩, আল মাওসূআতুল ফিকহিইয়া, ২৭/১৭৭)
وان كان مسجدا ليس له اهل معلوم بان كان على شوارع الطريق لا يكره تكرار الاذان والاقامة فيه. (بدائع الصنائع .١٥٣/١)
اماالمسجد الذي في سوق او في الطرق اوممر الناس فانه يجوز تكرار الجماعة فيه ولا تكره.( الموسوعة الفقهية الكويتية.١٧٧/٢٧)
৩) ইমাম-মুয়াযযিন নির্ধারিত আছে মহল্লার এমন মাসজিদে কিছু স্থানীয় লোক আযান ও এ'লান ছাড়াই বা চুপিসারে আযান ইকামত দিয়ে নির্ধারিত সময়ের পূর্বে জামাআতে নামায আদায় করে নিলে, পরবর্তীতে মহল্লাবাসীরা আযান ইকামত দিয়ে পুনরায় দ্বিতীয়বার জামাআতের সাথে নামায আদায় করতে কোনোই সমস্যা নেই। (বাদায়েউস সানায়ে'১/১৫৩)
وان صلي فيه اهله باذان واقامة او بعض اهله يكره لغير اهله و للباقين من اهله ان يعيدوا الاذان والاقامة...(بدائع الصنائع١٥٣/١)
৪) বহিরাগত লোকেরা এসে মহল্লার মসজিদে জামাআতের সাথে নামায আদায় করে নিলে মহল্লা বাসীদের জন্য পরবর্তীতে জামাআতের সাথে নামায আদায় করতে কোন অসুবিধা নাই। (বাদায়েউস সানায়ে, ১/১৫৩)
فان صلى فيه غير اهله باذان واقامة لا يكره لاهله ان يعيدوا الاذان والاقامة......
৫) মসজিদের বারান্দা মসজিদের অন্তর্ভুক্ত না হওয়ার নিয়তে নির্মাণ করে থাকলে বা মসজিদ থেকে ভিন্ন কোন স্থানে দ্বিতীয় জামাআত করে নামায আদায় করতে অসুবিধা নাই। তখন তা মাসজিদে দ্বিতীয় জামাআতের নিষেধাজ্ঞার আওতাধীন হবেনা।
সুনানে আবু দাঊদ শরীফের প্রথম খন্ডে বর্ণিত ৫৩৭ নম্বর হাদীস দ্বারা মাসজিদে দ্বিতীয় জামাআতের বৈধতার পক্ষে প্রমাণ পেশ করা যাবে না। কেননা উক্ত হাদীসটি মূলত দ্বিতীয় জামাতের সাথে সম্পৃক্ত নয়। এটা ছিল রূপক অর্থে দ্বিতীয় জামাআত, বাস্তবে দ্বিতীয় জামাআত ছিলো না। এই নামাযে একজন মাত্র ফরজ আদায়কারী ছিলেন। তার সঙ্গে শরিক ব্যক্তি নফল আদায়কারী ছিলেন। তিনি নিজের নামায পূর্বেই জামাআতের সাথে আদায় করে ফেলেছিলেন। এটাকে বাস্তবিক অর্থে দ্বিতীয় জামাআত বলা যায় না।




দ্বিতীয় জামাআত হচ্ছে, ইমাম-মুক্তাদী সকলেই যারা ইতিপূর্বে নামায আদায় করেন নি, তারা প্রথম জামাআতের পরে মাসজিদে দ্বিতীয় জামাআত করে নামায আদায় করা। উক্ত হাদীসটি এর বৈধতার সাথে মোটেও সম্পৃক্ত নয়।
 Mufti Shafi Qasemi
               -------------------------------------------------


আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে সহি ভাবে আমল করার তৌফিক দান করুন। আমিন। বিষয়টি শেয়ার করে আপনিও সওয়াবের অংশীদার হতে পারেন। 💗Thank you watching this💗

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.