ধূমপানের খারাপ প্রভাব-The bad effects of smoking
ধূমপানের খারাপ প্রভাব-The bad effects of smoking
ধুমপান বর্তমানে একটি সামাজিক ব্যধি হিসেবে রুপ ধারন করেছে। এটি একটি অপরাধ তা কেউ মনেই করেনা। এটি একটি সামাজিক সমস্যাই নয়, এটি একটি পাপ কাজ। অর্থাৎ ইসলাম ধর্ম মতে এটি একটি শাস্তি যোগ্য অপরাধ। কিন্তু আজকাল এটা কেউ মনেই করেনা। কেউ মনে করে এটি একটি বর্তমান ফ্যাশন, কেউ বা নিজেকে একজন প্রভাবশালী মনে করে ধুমপান করে। কিন্তু এই ধুমপানের কারনে রয়েছে শাস্তি। এটি অপরাধ। আজকে আমরা জানব ধুমপানের খারাপ প্রভাব। ধুমপানের ফলে যে ক্ষতি হয় এবং ইসলাম ধর্ম এটিকে কোন দৃষ্টিতে দেখে তা দেখব।
আল্লাহ তালার অসংখ সৃষ্টির মধ্যে মানুষ অন্যতম। এবং সমস্ত সৃষ্টির মধ্যে আল্লাহ তালা ঘোষনা করে দিয়েছেন মানুষই হলো শ্রেষ্ঠ। এবং এক মানুষ কে সুন্দর ভাবে জীবন চালানোর জন্য যা যা প্রয়োজন আল্লাহ তালা তার থেকে বেশি নিয়ামত রেখে দিয়েছেন। আল্লাহ তালা মানুষকে সদা পবিত্র ও হালাল রোজীর জন্য আদেশ দিয়েছেন। এবং অপবিত্র ও হারাম থেকে নিষেধ করেছেন।
আল্লাহ পাক বলেন, পবিত্র বস্তু থেকে তোমাদের যা জীবিকা হিসেবে দিয়েছি, তোমরা তা আহার কর।-সূরা তাহা-৮১।
অর্থাৎ এ আয়াত দ্বারা আমরা বুঝতে পারি যে, আল্লাহ তালা নিজে মানব জাতীকে পবিত্র থাকার আদেশ দিয়েছেন এবং হালাল উপার্জন করতে বলেছেন আর তা ব্যবহার করতে বলেছেন। মানব জাতীর জন্য যার মধ্যে উপকার রয়েছে আল্লাহ তা হালাল করে দিয়েছেন আর যে জিনিসে ক্ষতি রয়েছে তা হারাম করে দিয়েছেন। অর্থাৎ যা মনব জাতীর জন্য কল্যানকর তা হালাল ও পবিত্র করে দিয়েছেন। আর যা অকল্যানকর তা অপবিত্র ও হারাম করে দিয়েছেন।
আল্লাহ পাক ও রাসূল (সাঃ) মানব জাতীকে সেই শিক্ষা দিয়েছেন যে, কিসে মানুষের কল্যান আর কিসে অকল্যান। তার পরও কিছু মানুষ আছে তারা এই অপবিত্র ও হারাম বস্তুকে এমন ভাবে গ্রহণ করছে যা কেউ পবিত্র বস্তুও এমন করে ব্যবহার করেনা। এটাকে তারা একটা বদ অভ্যাস তৈরী করেছে। ধুমপান এমন একটি অপরাধ বা অভ্যাস। যার মধ্যে কোন কল্যান নেই। রয়েছে শুধু ক্ষতিকর দিক।
ইসলামের দৃষ্টিতে সব ধরনের ধুমপান অপরাধ। ধুমপান শুধু মাত্র অপচয়। যেখানে রয়েছে অন্যান্য ক্ষতি। ইসলামে সব ধরনের অপচয় ও অপব্যয় নিষেধ করা হয়েছে। আল্লাহ পাক অপচয় ও অপব্যয়কারী সম্পর্কে বলেন, নিশ্চয় অপব্যয়কারীরা শয়তানের ভাই। (বনি ইসরাইল-২৭)
এ আয়াত থেকে স্পষ্ট বুঝা যায় ধুমপানকারী শয়তানের ভাই। শুধু ধুমপানকারী নয় সকল প্রকার অপচয় ও অপব্যয়কারী শয়তানের ভাই। অর্থাৎ শয়তানের জাতী হিসেবে তাদের উল্লেখ করা হয়েছে।
মোহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি দুর্গন্ধযুক্ত দ্রব্য খায়, সে যেন ( ঐ অবস্থায়) মসজিদের নিকটবর্তীও না হয়।
ধুমপান এমন দুর্গন্ধযুক্ত একটি দ্রব্য। অতএব কেউ যদি ধুমপান করে কোন ইবাদত করে তবে তা না হওয়াটা ঠিক। এটি এমন একটি খারাপ অপরাধ যে নবী (সাঃ) এ অবস্থায় মসজিদে প্রবেশ নয় বরং এর নিকটেও যেতে বারন করেছেন।
আর আমাদের দেশে এমনও লোক আছে যারা রমজান মাসে সারাদিন ধুমপান করতে পারেনা বলে তারা ইফতার করে ধুমপানের মাধ্যমে এবং সাহরি খাওয়া শেষে তারা আবার ধুমপান করে নেই দ্রুত। এটা জগন্যতম বিষয়। ধুমপান একটি নেশাজাতীয় দ্রব্য। আর নেশা সম্পর্কে নবী মোহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন, সকল প্রকার নেশার বস্তু হারাম।
এই হাদিস দ্বারা বুঝতে পারি যে ধুমপান করা হারাম। অনেকে এটিকে হারাম না বলে মাকরুহ বলে। কিন্তু এই হাদিসের পর আর ধুমপান মাকরুহ থাকতে পারেনা। আর হারাম বস্তু বক্ষন করার পর তার ইবাদত কবুল হতে পারেনা। ধুমপান করলে শুধু ধুমপায়ীর ক্ষতি হয়না। তার পাশে যে থাকে তারও ক্ষতি হয়। আর তার পাশে যদি অধুমপায়ী হয় তবে তা তার কাছে বিরক্তিকর মনে হয়। ধুমপানের কারনে মানুষের মৃত্যু হয়। যা আত্নহত্যার শামীল। আর আত্বহত্যা ইসলামে একটি বিশাল বড় পাপ। তাছাড়া অনেকে এই ধুমপানের টাকা ব্যবস্থা করার জন্য অনেক অপরাধেরে সাথে জড়িয়ে পরছে।
ধুমপান আমাদের পরিহার করতে হবে। এর জন্য শুধুমাত্র আমাদের ইচ্ছা শক্তিই যথেষ্ট। সকলের চেষ্টােয় ধুমপান মুক্ত হলে মানবজাতী একটি সুন্দর পরিবেশ এবং একটি সুন্দর জীবন পাবে।
কোন মন্তব্য নেই
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন