হালাল উপার্জন-Legitimate earnings
হালাল উপার্জন- Legitimate earnings
মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। আল্লাহ মানুষ সৃষ্টি করেছেন, সেই সাথে তাকে দিয়েছেন বিভিন্ন ধরনের চাহিদা। আর দেওয়া হয়েছে সেই চাহিদা পূরনের নানা রকম মাধ্যম। দেওয়া হয়েছে মানুষের সব থেকে দামি পাওয়া বিবেক ও মূল্যবোধ। যার মাধ্যমে মানুষ তার ভাল মন্দ সব কিছু বিচার করতে পারে। বুঝতে পারে ঠিক বা ভূল। দেহ সুস্থ রাখার জন্য যেমন জীবিকার দরকার তেমন আত্নাকে সুস্থ রাখার জন্য প্রয়োজন রয়েছে হালাল উপার্জন। বিভিন্ন ভাবেইতো উপার্জন করা যায়। একজনের সম্পদ আরেকজন ভোগ করতে পারে। কিন্তু এর জন্যই আল্লাহ পাত দান করেছেন বিবেক। যেন সে নিজের ও অন্যের ক্ষতি উপলব্ধি করতে পারে।
এ মর্মে আল্লাহ পাক বলেন, তোমরা উত্তম ও পবিত্র বস্তু খাও, যা আমি তোমাদের জীবিকা রুপে দান করেছি।( আল বাকারা-১৭৭)
কোনটি হালাল আর কোনটি হারাম তা আল্লাহ মানুষকে শিক্ষা দিয়েছেন। আল্লাহ ও রাসুল ( সাঃ) যা নির্দেশন ও অনুমোদন করেছেন তাই বৈধ বা হালাল।
কেন হালাল উপার্জন করব
হালাল উপার্জন মানুষকে প্রশান্তি দান করে। মানুষ হালাল উপার্জনের মাধ্যমে তৃপ্তি পেয়ে থাকে। হালাল উপার্জন পরিমানে কম হলেও মনের শন্তি থাকে। মন থাকে প্রফুল্ল। আর হারাম বা অবৈধ উপার্জন মানুষের মনকে নষ্ট করে দেয়, অসুস্থ করে দেয় মানুষের আত্নাকে। যেখান থেকে শুরু হয় বিভিন্ন অসুখ। তবু কিছু অসুস্থ বিকৃত বিবেকের মানুষ হারাম পথে আয় করে থাকে। যা তারা নিজেরাই বৈধ করে নিয়েছে। কিন্তু এতে তাদের পরিবারের অনেক বড় ধরনের ক্ষতি হয় যা তাদের বিকৃত বিবেক বুঝতে পারেনা। যদি তারা এটা বুঝতে পারতো তবে তারা কখনোই অবৈধ পথে আয় করত না। আল্লাহ পাক মানবজাতী সৃষ্টি করেছেন শুধু মাত্র তাঁর ইবাদত করার জন্য আর সকল কিছু সৃষ্টি করেছেন মানুষের উপকারের জন্য। আল্লাহ তালা পবিত্র কোরআনে বলেন, আমি জ্বিন মানব সৃষ্টি করেছি শুধু আমার ইবাদতের জন্য।
তাহলে এই আয়াত দ্বারা বুঝা যায় মানব জাতীর প্রথম কর্তব্য হলো আল্লাহ পাকের ইবাদত করা। আল্লাহ তালা ও রাসূল (সাঃ) এর প্রত্যেকটি হুকুম পালন করা এবং যা নিষেধ করেছেন তা না করাই হলো ইবাদত। যেখানে আল্লাহ নিজেই হালাল উপার্জনের আদেশ করেছেন যা আমরা উপরের আয়াত থেকে বুঝতে পারি।
হালাল উপার্জন একটি ইবাদত তা আমরা আরো সহজেই বুঝতে পারি এই হাদিস দ্বারা- নবী মোহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন, হালাল রুজি উপার্জন করা ফরজের পরেও আরা একটি ফরজ। প্রত্যেকটি ফরজ হুকুম পালন করা একটি ইবাদত এবং তা অমান্য করা একটি বড় ধরনের পাপ।
আল্লাহ পাক বলেন, সালাত সমাপ্ত হয়ে গেলে পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ অন্বেষণ কর-(সুরা জুমা-১০)
আল্লাহ পাকের এই আয়াত দ্বারা বুঝা যায় শুধু সালাত আদায় করাই ইবাদত বা আল্লাহর হুকুম নয়। কারন এই আয়াতে আল্লাহ হালাল উপার্জন এর জন্য আদেশ করেছেন। আজকে হয়তো কেউ হারাম পথে দশ হাজার টাকা উপার্জন করল আর বাসায় এসে দেখল তার সন্তান খুব অসুস্থ। এমন অবস্থায় তার কাছে কোন টাকা নেই সেই হারাম পথের দশ হাজার টাকা ব্যতিত। এরপর সে তার সন্তানকে হাসপাতালে নিয়ে সেই হারামের টাকা খরচ করে সুস্থ করে নিয়ে আসল। (উদাহরন)
বিকৃত ও অসুস্থ মনের মানুষ চিন্তা করবে যদি ঐ হারামের দশ হাজার টাকা না থাকত তবে সে তার সন্তানকে বাচাতে পারতনা। প্রকৃতপক্ষে টাকার কোন ক্ষমতা নেই মারা বা বাচানোর। আর সুস্থ মনের বা বিবেকের মানুষ চিন্তা করবে আজকে হয়তো সে হারাম টাকা উপার্জন করছে বলে আজকে তার সন্তান অসুস্থ হয়েছে। ফলে সে তওবা করে মাপ চেয়ে নেবে এবং প্রতিজ্ঞা করবে যে আর কোন দিন সে হারাম পথে উপার্জন করবে না। যার বিবেক যেমন সে তেমন চিন্তা করবে। তবে বুঝতে পারাটা সকলের ভাগ্যে জুটেনা। আল্লাহ পাক আমাদের ক্ষমা করে হালাল উপার্জনের তাওফিক দান করুক। আমিন।
লজ্জাবতীর গুনাগুন জানতে এখানে ক্লিক করুন
কোন মন্তব্য নেই
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন