পবিত্র কোরআন পাঠের ফযীলত
পবিত্র কোরআন পাঠের ফযীলত
পবিত্র কোরআন পাঠের ফবীলত সম্পর্কে অনেক বর্ণনা উল্লেখ রয়েছে। নিম্নে এ সম্পর্কে কয়েকটি উদ্ধৃতি আলোচিত হল ।
✍️ হযরত রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করেন- “যে ব্যক্তি পবিত্র কোরআনের একটি অক্ষর পাঠ করবে, সে দশটি নেকী পাবে। আমি বলি না যে, আলিফ-লাম-মীম একটি অক্ষর। বরং আলিফ একটি অক্ষর, লাম একটি অক্ষর এবং মীম একটি অক্ষর। সুতরাং এ তিনটি অক্ষর পাঠ করলে ত্রিশটি নেকী পাওয়া যাবে।"
✍️ হযরত ওসমান (রাঃ) হতে বর্ণিত এক হাদীসে উল্লেখ আছে— “তোমাদের মধ্যে ঐ ব্যক্তি সর্বোত্তম, যে নিজে কোরআন শিক্ষা করেছে এবং অপরকেও শিক্ষা নিয়েছে।” (বুখারী শরীফ)
✍️ হযরত আবুবকর (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন – “রাসূলে কারীম (সাঃ) ইরশাদ করেন, মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য তোমরা ঐ জিনিস হতে অনেক মূল্যবান আর কোন জিনিস পাবে না, যা স্বয়ং আল্লাহ্ তা'আলার পবিত্র জবান হতে বের হয়েছে। তথা আল-কোরআন।”
✍️ হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, হযরত নবী কারীম (সাঃ) ইরশাদ করেন যে – পবিত্র কোরআনের মর্যাদায় অনেক লোক মর্যাদার উচ্চ শিখরে আরোহণ করবে, আর কোরআন শরীফের অমর্যাদার কারণে অধিকাংশ লোক নিকৃষ্টতম পর্যায়ে পৌঁছে যাবে। (মুসলিম শরীফ)
✍️ পবিত্র হাদীস শরীফে আরও উল্লেখ আছে- "যে ব্যক্তি মহাপবিত্র কোরআন মজিদ পাঠ করে এবং তদানুযায়ী আমল করে, কিয়ামাতের দিন (পুরস্কার স্বরূপ) তার মাতা-পিতাকে সূর্যের আলো অপেক্ষাও জ্যোতিৰ্ময় টুপি পরিধান করান হবে।"
যারা কোরআন শরীফ তিলাওয়াত করতে জানে না তাদের দুরবস্থা কথা বর্ণনা করে পবিত্র কোরআনে ঘোষণা হয়েছে—
✍️ “যার অন্তরে কোরআনের কোন অংশ নেই, সে ব্যক্তি বিরান (জন-মানবহীন) ঘরের মত।” অর্থাৎ যে ব্যক্তি কোরআন শিক্ষা করেনি বা কোরআন পড়তে জানে ন সে অনুপযুক্ত লোক। সুতরাং তার জীবনের কোন মূল্য নেই।
✍️ তিরমীযি শরীফের হাদীসে রাসূলে কারীম (সাঃ) হতে উদ্ধৃত এক হাসীসে বর্ণিত আছে——নফল ইবাদাতসমূহের মধ্যে মহাপবিত্র কোরআনে কারীম তিলাওয়াতের ছাওয়াব অনেক বেশি। সুতরাং তোমরা সর্বদা পবিত্র কোরআন মজিদ তিলাওয়াত করবে। কেননা হাশরের মাঠে পবিত্র কোরআন মজিল তার পাঠকের জন্য (মহাপরাক্রমশালী আল্লাহর নিকট) সুপারিশ
করবে।
✍️ অন্য এক হাদীসে রাসূলে কারীম (সাঃ) ইরশাদ করেছেন ---- মানুষের মৃত্যুর পর যখন তাকে কবরে দাফন করা হবে তখন মুনকার নাকীরের প্রশ্ন করার সময়ে মৃতের পক্ষ হতে একজন যুবক বলবে ইনি আমার বন্ধু। আমি তাঁকে একাকী ভাবে ছেড়ে যেতে পারি না। কেননা দুনিয়াতে থাকাকালীন সময়ে এ ব্যক্তি মহাপবিত্র কোরআনে কারীম তিলাওয়াত করেছিল আর এখন আমিই তার ঐ পবিত্র কোরআন। সুতরাং আপনাদের প্রশ্ন আপনারা করতে পারেন, আমি কিন্তু আমার এ বন্ধুকে বেহেশতে না পৌঁছায়ে তাঁর নিকট হতে বিদায় নিতে পারব না। এরপর মৃতব্যক্তির নিকট আত্মপরিচয় নিয়ে বলবে, আমি আপনার দুনিয়াতে পাঠকারী ঐ কোরআন যা আপনি কখনও উচ্চৈঃস্বরে কখনও নিম্নস্বরে পাঠ করতেন। এখন আপনি নিশ্চিন্ত থাকুন, মুনকার সাব্বীরের প্রশ্নের জন্য আপনার কোন ভয় নেই। এরপর ফিরিশতাদের প্রশ্নের পর তাঁকে বেহেশতের পোশাক ও বিছানা দান করা হবে। যাঁর সাথে দুনিয়ার কোন কিছুর তুলনা করা কারও পক্ষে সম্ভব নয়। (হাকেম) মহান করুণাময় আল্লাহ্ আমাদের সকলকেই কোরআন মজিদ পাঠ করে সকল নি’আমাতসমূহ অর্জন করার তৌফিক দান করুন।
উল্লিখিত আলোচনা হতে বুঝা গেল, কোরআন মজীদ পাঠ করলে আল্লাহ্ এবং রাসূলের প্রিয়পার হওয়া যায়। যে কোরআনের প্রতিটি হরফ পাঠে দশটি করে নেকী পাওয়া যায়, যে কোরআন শিক্ষা এবং 'আমলের কলে মাতা-পিতাকে নূরের টুপি দান করা হবে, কবর, হাশর ও মহান আ নৈকট্য লাভ করে ইহকালীন জীবনে শান্তি ও পরকালীন জীবনে মুক্তিলাভের বর্ণনা উল্লেখ রয়েছে। সাধ্য থাকতে কখনও সে কোরআন পাঠে অবহেলা করা সমীচীন নয়। তাই সকলেরই উচিত হাতে সময় থাকতে এখনও কোরআন মজিদ সহীহ-শুদ্ধভাবে পাঠের অভ্যাস করে নিজের জীবনকে সুন্দর- সুশৃংখলভাবে সাজানোর চেষ্টা করা।
কোন মন্তব্য নেই
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন