আয়াতুল কুরসি এর ফজিল
আয়াতুল কুরসি এর ফজিলত
কুরআন পাকের সর্বশ্রেষ্ঠ আয়াত হল, আয়াতুল কুরসি। এ আয়াতের মধ্যে আল্লাহ তায়ালার সত্তা বাচক ও গুনবাচক নামের সমাবেশ হয়েছে। তাঁর প্রভুত্ব, একত্ববাদ, জীবন, জ্ঞান, স্থায়িত্ব, অধিকার, কুদরত, অভিপ্রায় ইত্যাদি গুনাবলির বর্ণনা হয়েছে।
* হাদিস শরীফে বর্ণিত আছে - প্রত্যেক বস্তুর একটা মূল বা চূড়া আছে। পবিত্র কুরআন শরীফের শীর্ষ সূরা হলো সূরা বাকার এবং উত্তম আয়াত হল আয়াতুল কুরসি। ( তিরমিজি)
* হযরত উবাই ইবনে কা´ব (রা) হতে বর্ণিত, একদা রাসুল পাক সাঃ আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, হে আবুল মোঞ্জের! পবিত্র কালামে পাক এর কোন আয়াত টি তোমার কাছে সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ বলে মনে হয়? আমি বললাম আয়াতুল কুরসি। আমার উত্তর শুনে হুজুর সাঃ তাঁর পবিত্র হাত দ্বারা আমাকে বুকে মৃদু আঘাত করে বললেন হে আবুল মঞ্জির! কি উত্তম জ্ঞানী না তুমি অর্জন করেছ।
* হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে, যে ব্যক্তি প্রত্যেক নামাজের পর আয়াতুল কুরসি পড়বে, তার বেহেস্তে প্রবেশে মৃত্যু ব্যতীত আর কোন বাধা দিতে পারবে না। ( সুবহানাল্লাহ )
* শুইবার পূর্বে এ আয়াত শরীফ পড়ে শয়ন করলে নিজের ও প্রতিবেশীর বাড়ি ঘর নিরাপদ থাকবে। এ আয়াত শরীফ এশার পরে তিনবার পরে হাতে ফু দিয়ে একটি বা তিনটি তালি দিলে আল্লাহর ইচ্ছা চোর ডাকাত বা অন্য সব অনিষ্ট হতে নিরাপদ থাকবে।
* অন্য এক হাদিসে বর্ণিত আছে - যে ব্যক্তি সকালে ও নিদ্রায় যাবার কালে আয়াতুল কুরসি পাঠ করবে, আল্লাহ তাআলা তার রক্ষক, দিন ও রাতের মধ্যে শয়তান ও তার কোন অনিষ্ট করতে পারবেনা।
* সহি হাদিস শরীফে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি ভোরবেলা এবং নিদ্রার পূর্বে এ আয়তাল কুরসি পাঠ করবে, স্বয়ং আল্লাহ তা'আলা তাঁর তত্ত্বাবধানকারী হবেন। সুতরাং দিবা রাত্রের মধ্যে কখনো শয়তান তার নিকট ঘেষতে পারবে না।
* কারো শরীর বন্ধ করতে হলে এশার নামাজের পর এ আয়াতুল কুরসি তিনবার পাঠ করে উভয় হাতে দম করে একটি তালি দিবে। আল্লাহর রহমতে শরীরের উপর জীন পরি বা ভূত-প্রত তার কোনোরূপ ক্ষতি সাধন করতে পারবে না।
* বাস গৃহ কিংবা দোকান গৃহ ইত্যাদির দরজায় অত্র আয়াত লিখে লটকাইয়া রাখলে উপার্জন বৃদ্ধি হয় এবং চোর ডাকাত প্রবেশ করতে পারবে না।
* কিছু লবণের ওপর এটা সাতবার পাঠ করে সাতটি ফু দিয়ে ওই লবণ সাত ভাগ করে একাধিক্রমে সাত দিন প্রাতঃকালে খালি পেটে খেতে থাকলে কাশি রোগীর কাশ ভালো হবে।
* গভীর রাতে একাকী চলবার সময় কিংবা কোন ভয়ংকর নির্জন স্থানে উপস্থিত হয়ে এই আয়াতটি পড়তে থাকলে আল্লাহর রহমতে কোন জ্বীন, ভূত, দেউ, পরী বা অন্য কিছুতে কোনরূপ ক্ষতি করতে পারে না।
* প্রত্যেক ফরজ নামাজের পূর্বে অথবা পরে এটা একবার করে পাঠ করলে উপার্জন বৃদ্ধি হবে প্রাতঃকালে এই আয়াত পড়ে কাজে বের হলে কোন বিষয়ে কারো মুখাপেক্ষী হতে হবে না।
*প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) বলেছেন: যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ সালাতের পর আয়াতুল কুরসি পাঠ করবে, তার মৃত্যুর সময় সহজভাবে জান কবজ করা হবে।
* যারা আয়াতুল কুরসি পাঠ করবে আল্লাহ তাদের জান্নাতের আটটি দরজার সবগুলো দিয়ে প্রবেশ করার সুযোগ দিবেন।
এছাড়া বিভিন্ন হাদিস শরীফে এই আয়াতুল কুরসির অনেক ফজিলত বর্ণনা করা আছে।
আয়াতুল কুরসি
اللّٰهُ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ الْحَـىُّ الْقَيُّوْمُ لَا تَاْخُذُهٗ سِنَةٌ وَّلَا نَوْمٌؕ لَهٗ مَا فِى السَّمٰوٰتِ وَمَا فِى الْاَرْضِؕ مَنْ ذَا الَّذِىْ يَشْفَعُ عِنْدَهٗۤ اِلَّا بِاِذْنِهٖؕ يَعْلَمُ مَا بَيْنَ اَيْدِيْهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْۚ وَلَا يُحِيْطُوْنَ بِشَىْءٍ مِّنْ عِلْمِهٖۤ اِلَّا بِمَا شَآءَ ۚ وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضَۚ وَلَا يَـــُٔوْدُهٗ حِفْظُهُمَا ۚ وَ هُوَ الْعَلِىُّ الْعَظِيْمُ
বাংলা উচ্চারণ: আল্লা-হু লাইলা-হা ইল্লা-হুওয়া আল হাইয়ুল কাইয়ূমু লা-তা’খুযুহূ ছিনাতুওঁ ওয়ালা-নাওমুন লাহূ মা-ফিছ ছামা-ওয়া-তি ওয়ামা-ফিল আরদি মান যাল্লাযী ইয়াশফা‘উ ‘ইনদাহূইল্লা-বিইযনিহী ইয়া‘লামুমা-বাইনা আইদীহিম ওয়ামা-খালফাহুম ওয়ালা-ইউহীতূনা বিশাইইম মিন ‘ইলমিহীইল্লা-বিমা-শাআ ওয়াছি‘আ কুরছিইয়ুহুছ ছামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদা ওয়ালা-ইয়াঊদুহু হিফজু হুমা-ওয়া হুওয়াল ‘আলিইয়ূল ‘আজীম।
অর্থ : আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন উপাস্য নেই, তিনি জীবিত, সবকিছুর ধারক। তাঁকে তন্দ্রাও স্পর্শ করতে পারে না এবং নিদ্রাও নয়। আসমান ও যমীনে যা কিছু রয়েছে, সবই তাঁর। কে আছ এমন, যে সুপারিশ করবে তাঁর কাছে তাঁর অনুমতি ছাড়া? দৃষ্টির সামনে কিংবা পিছনে যা কিছু রয়েছে সে সবই তিনি জানেন। তাঁর জ্ঞানসীমা থেকে তারা কোন কিছুকেই পরিবেষ্টিত করতে পারে না, কিন্তু যতটুকু তিনি ইচ্ছা করেন। তাঁর সিংহাসন সমস্ত আসমান ও যমীনকে পরিবেষ্টিত করে আছে। আর সেগুলোকে ধারণ করা তাঁর পক্ষে কঠিন নয়। তিনিই সর্বোচ্চ এবং সর্বাপেক্ষা মহান।
আল্লাহ্ আমাদেরকে আয়াতুল কুরসী মুখস্ত এবং নিয়মিত পাঠ করার তাওফিক দান কারুন এবং এর গুরুত্ব অনুধাবন করে আমাদের জীবন গড়ার তাওফিক দান কারুন (আমিন)। লিখাটি ভাল লাগলে অবশ্যই শেয়ার করবেন। অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিয়ে আপনিও সওয়াবের ভাগিদার হবেন।
কোন মন্তব্য নেই
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন