বদ নজরের কারণ ও এর থেকে বাঁচার উপায়
বদনজর থেকে বাঁচার উপায়
বদ নজর কি :
আপনাদের বলতে মূলত খারাপ দৃষ্টি বা কুদৃষ্টি বুঝায়। অর্থাৎ হিংসাত্মক মূলক দৃষ্টি। কারো উন্নতি কিংবা কারো ভালো দেখে যখন অন্য কেউ হিংসা করে বা তার প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়, সেটি হয় বদনজর।
বদনজরকে কুদৃষ্টি বা অশুভ দৃষ্টিও বলা হয়। বদ নজরের এই প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া নিতান্ত সত্য। ইমাম কুরতুবি (রহ.) লিখেছেন, আহলে সুন্নত ওয়াল জামাতের শীর্ষস্থানীয় আলেমরা এ বিষয়ে একমত যে ‘চোখ লাগা’ এবং এর মাধ্যমে ক্ষতিসাধিত হওয়া প্রমাণিত সত্য।
বদনজরের কারণ :
একটি বাচ্চা দেখতে খুব সুন্দর, তার মেধা খুব সুন্দর, তার স্বাস্থ্য খুব সুন্দর। এমন কাউকে দেখে যখন হিংসে করে তাকায়, হিংসার দৃষ্টিতে দেখে তখন তা ওই ব্যক্তির জন্য মন্দ হয়, যাকে আমরা বদনজর বলি। বদনজরের কারণে যে কারো যে কোন ধরনের ক্ষতি হতে পারে। কারো অসুখ হতে পারে, কারো ফসল নষ্ট হতে পারে বা অন্যান্য সমস্যা হতে পারে
বদনা থেকে বাঁচার উপায় :
হাদীস ১:
নিচের এই আমল করতে পারেন।
বদনজর থেকে বাঁচার জন্য সূরা ফাতেহা, সূরা ফালাক, সূরা নাস ও আয়াতুল কুরসীর পাশাপাশি হাদিসে বর্ণিত নিম্নোক্ত দোয়াগুলো পাঠ করা যেতে পারে,
أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّاتِ مِنْ شَرِّ مَا خَلَقَ
‘আঊযু বিকালিমাতিল্লা-হিত্ তা-ম্মাতি মিন শাররি মা খালাক্ব (আমি আল্লাহর পরিপূর্ণ কালাম দ্বারা তাঁর কাছে তাঁর সৃষ্টির অনিষ্ট থেকে আশ্রয় চাই)।’ [সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৬৬৩১]
হাদীস ২:
হাদিসে এসেছে,
أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّةِ مِنْ كُلِّ شَيْطَانٍ وَهَامَّةٍ، وَمِنْ كُلِّ عَيْنٍ لاَمَّةٍ
‘আঊযু বিকালিমাতিল্লাহিত্ তাম্মাতি মিন কুল্লি শাইতানিন ওয়া হাম্মাতিন ওয়া মিন কুল্লি আয়নিন লাম্মাতিন (আমি আল্লাহর পরিপূর্ণ কালিমাত দ্বারা প্রত্যেক শয়তান, বিষাক্ত প্রাণী এবং প্রত্যেক কুদৃষ্টির অনিষ্ট হতে পানাহ চাচ্ছি)।’ [সহিহ বুখারি, হাদিস: ৩১৩২]
হাদীস ৩ :
এক হাদিসে এসেছে,
بِاسْمِ اللَّهِ أَرْقِيكَ مِنْ كُلِّ شَيْءٍ يُؤْذِيكَ مِنْ شَرِّ كُلِّ نَفْسٍ وَعَيْنِ حَاسِدٍ بِاسْمِ اللَّهِ أَرْقِيكَ وَاللَّهُ يَشْفِيكَ
‘বিসমিল্লাহি আরকিকা মিন কুল্লি শাইয়িন ইউযিকা মিন শাররি কুল্লি নাফসিন ও আয়নি হাসিদিন বিসমিল্লাহি আরকিকা ওয়াল্লাহু ইয়াশফিকা (আমি আপনাকে আল্লাহ তাআলার নামে ঝাড়ছি এমন সকল কিছু হতে যা আপনাকে কষ্ট দেয় এবং সকল প্রকার অনিষ্টকর প্রাণী ও সকল হিংসুটে দৃষ্টি হতে। আল্লাহ তাআলার নামে আমি আপনাকে ঝাড়ছি, আপনাকে আল্লাহ তাআলা সুস্থতা দান করুন)।’ [সুনানে তিরমিযী, হাদিস: ৯৭২]
প্রত্যেকদিন সকাল সন্ধ্যা এই দোয়াগুলো পড়ে নিজের শরীরে ফু দিলে তাহলে নিজে নিরাপদে থাকবে, অন্যের শরীরে দিলে সেও নিরাপদে থাকবে, আর যে বদনজর দ্বারা আক্রান্ত তাকে এই আমল করালে বা এই দোয়াগুলো পড়ে তার শরীরে ফুঁক দিলে আল্লাহর রহমতে সুস্থ হয়ে যাবে ইনশাল্লাহ।
উচ্চারণ : কুল হু ওয়াল্লাহু আহাদ। আল্লাহুছ ছামাদ। লাম ইয়ালিদ ওয়ালাম ইউলাদ। ওয়া লাম ইয়া কুল্লাহু কুফুওয়ান আহাদ।
উচ্চারণ : বিসমিল্লাহির রাহমা-নির রাহি-ম।
কুল আ‘ঊযুবিরাব্বিন্না-ছ,
মালিকিন্না-ছ,
ইলা-হিন্না-ছ।
মিন শাররিল ওয়াছ ওয়া-ছিল খান্না-ছ।
আল্লাযী ইউওয়াছবিছুফী সুদূরিন্নাছ-।
মিনাল জিন্নাতি ওয়ান্না-ছ।
উচ্চারণ : বিসমিল্লাহির রাহমা-নির রাহি-ম
কুল আউযু বিরাব্বিল ফালাক।
মিন শাররি মাখালাক্ব।
ওয়া মিন শাররি গাসিক্বিন ইযা অক্বাব।
ওয়া মিন শাররিন নাফ্ফাসাতি ফিল্ উকাদ।
ওয়া মিন শাররি হাসিদিন ইযা হাসাদ।
এছাড়াও প্রত্যেকদিন ফজর ও মাগরিবের নামাজের পর সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক ও সূরা নাস সেই সাথে আয়াতুল কুরসি তিনবার করে পাঠ করে শরীরে ফুক দিলে আল্লাহর রহমতে কোন অপশক্তি ওই আমলকারীর ক্ষতি করতে পারে না।
কোন মন্তব্য নেই
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন