Header Ads

Header ADS

ঈ‌দের আনন্দ

আব্দুল্লাহ ৪র্থ শ্রেনি‌তে প‌ড়ে। তা‌কে সবসময় করা শাস‌নে রাখা হয়। তার বাব‌া খুবই বদ বদমেজা‌জি। সারা‌দিন শুধু আব্দুল্লাহ‌কে পড়‌তে ব‌লে। আব্দুল্লাহ তার ব‌াবা‌কে অ‌নেক ভয় পায়। রমজান মাস শে‌ষের দি‌কে। আগা‌মিকাল হয়‌তো ঈদ ,ত‌বে এর ম‌ধে‌্য স‌ন্দেহ আ‌ছে। য‌দি শাওয়া‌লের চন্দ্র আকা‌শে দেখা যায় ত‌বে ঈদ নয়‌তো না। আহ্ , শাওয়াল শব্দটা শুন‌লেই ম‌নে কেমন এক অনুভূ‌তি জা‌গে। পাড়ার সব বাচ্চারা মস‌জি‌দের সাম‌নে দা‌ড়ি‌য়ে আকা‌শের দি‌কে তা‌কি‌য়ে আ‌ছে। সবাই খুব উ‌ত্তে‌জিত। কোথায় আ‌ছে চাদ। কখন ‌দেখা যা‌বে চাদ। বাচ্চারা এ‌কেক জন এ‌কেক জন দি‌কে তা‌কি‌য়ে আ‌ছে। ‌কিন্তু আব্দুল্লাহ এখ‌‌নো বই নি‌য়ে ব‌সে আ‌সে। তার বাবা আজ‌কের দি‌নেও তা‌কে ছু‌টি দি‌‌চ্ছেনা।

ঈদের আনন্দ




 আব্দুল্লাহর মনটা খুব খারাপ। তবু বাবার হা‌তে মার খাওয়ার ভ‌য়ে বই ‌নি‌য়ে ব‌সে আ‌‌ছে টে‌বি‌লের সাম‌নে। এ‌দি‌কে বাচ্চারা যে কি প‌রিমান হইচই শুরু কর‌ছে তা আর ব‌লার ম‌তো না। তা‌দের হইচই করার কারন তারা আকা‌শে চাদ দে‌খে‌ছে। কিন্তু আজ‌কের দি‌নের সা‌থে এই কথা‌ ‌কোন ভা‌বেই মিলা‌নো যায়না। যেখা‌নে আকা‌শে বড় মানু‌ষেরা চাদ দে‌খেনা ‌সেখা‌নে এই ‌ছোট ছোট ছে‌লেরা মে‌য়েরা কিভা‌বে চাদ দে‌খে। বাচ্চারা মি‌ছিল কর‌তে কর‌তে বা‌ড়ি‌তে প্রবেশ করল। তা‌দের চিৎকা‌রের শব্দ আব্দুল্লাহর কা‌নে পৌছা‌তেই তার মনটা যেন ছিদ্র করা হ‌লো। 

‌ছে‌লে ‌মে‌য়ের দলগু‌লো আব্দুল্লাহর চাচাত বোন মায়া‌দের ঘ‌রে আড্ডা ব‌সি‌য়েছে। সেখা‌নে অন‌্যান‌্য বা‌ড়ি থে‌কে অ‌‌নেক ছে‌লে‌মে‌য়ে এ‌‌সে‌ছে হা‌তে মে‌হেদী লাগা‌‌নোর জন‌্য। এ‌কেক জ‌নে এ‌কে‌ক রকম কথা বল‌ছে আর উচ্চস্ব‌রে হাস‌ছে। যা বার বার আব্দুললাহর কা‌নে এ‌সে কাটার ম‌তো আঘাত হান‌‌তে শুরু করল। কেউ কেউ উচ্চস্ব‌রে গান শুন‌ছে ‌টি‌ভি‌তে। চার‌দি‌কেই সেই গান। এ‌কি গান সবাই শুন‌ছে। রমজা‌নের ‌রোজার শে‌ষে এ‌লো খু‌শির ঈদ। আবার অ‌নে‌কে আতশবা‌জি ফাটা‌‌‌নোই ব‌্যস্ত। এসব‌‌কিছু বি‌বেচনা ক‌রে আব্দুল্লাহর মা‌য়ের আ‌বেদ‌‌নে আব্দুল্লাহ‌কে পড়ার টে‌বিল ত‌্যাগ করার অনুম‌তি দিল তার বাবা। পড়ার টে‌বিল ত‌্যাগ ক‌রেই সে প্রবেশ করল মায়া‌দের ঘ‌রে। ঘ‌রে ঢু‌কেই দেখ‌তে পেল বিশাল ভিড়। যেখা‌নে তার অবস্থান সবার শে‌ষে। তবু তার ম‌নে ‌কেমন যে আনন্দ লাগ‌তে‌ছিল তা সে নি‌‌জেও জা‌নেনা। বল‌তেও পার‌বেনা । সে আসল ঈ‌দের আনন্দ হয়‌তো এখন উপ‌ভোগ কর‌ছে। ম‌নে হ‌চ্ছে সে ব‌ন্দি কারাগার থে‌কে বের হ‌লো মুক্ত কোন এক জায়গায় । ভি‌ড়ের মা‌ঝে ব‌সে সেও সময় কা‌টা‌তে লাগল। আর ‌দেখ‌তে‌ছিল কার হা‌তের ‌মে‌হে‌দি বে‌শি সুন্দর হয়। এভা‌বে আব্দুল্লাহর ডাক আসল রাত 12 টার সময়। মে‌হে‌দি দি‌য়েই সে ঘু‌মি‌য়ে পড়ল। সকাল ঘুম ‌থে‌কে উ‌ঠে সবার আ‌গে সে তার হা‌তের মে‌হে‌দি দেখ‌তে গেল। দেখ‌তে পেল‌ খুব ভাল রং হ‌য়ে‌ছে মে‌‌হে‌দির। সকাল বেলা আ‌শেপা‌শের বা‌ড়ি হে‌টে ঘৃ‌রে দে‌‌খে এল সবাই রান্না করে‌ছে। আজ‌কে সবাই সকাল বেলা রান্না শুরু ক‌রে‌ছে। এ‌টি ঈ‌‌দের আ‌রেক‌টি রুপ। মায়া আব্দল্লাহ‌কে ডাক‌ছে গোসল ক‌রি‌য়ে দেওয়ার জন‌্য। সকাল‌বেলা নতুন সাবান দি‌য়ে মায়া আব্দুল্লাহ‌কে গোসল ক‌রি‌য়ে দিল। রা‌তে হা‌তে মে‌হে‌দি প‌ড়ি‌য়ে আর সকাল‌বেলা ‌গোসল ক‌ি‌রে‌য়ে দি‌য়ে মায়া নি‌‌জে‌কে বো‌নের দা‌য়িত্ব পালন কর‌তে পে‌রে‌‌ছে ব‌লে ম‌নে কর‌ছে। গোসল শে‌ষে আব্দুল্লাহ‌কে নতুন কাপড় প‌ড়ি‌য়ে দিল, কাপ‌ড়ে সুগন্ধী মে‌খে দিল। তরপর আব্দুল্লাহর হাত‌ে নতুন টাকার নোট দিল। এভা‌বে মায়া নি‌জেও ্ঈ‌দের আনন্দ উপ‌ভোগ করল। আর আব্দুল্লাহর আনন্দত আকাশ ছোয়া। #ঈ‌দের-আনন্দ ভূলার ম‌‌‌তো না। সবাই সবার সা‌থে দেখা করা। সালাম করা,, আপ‌্যায়ন করা এ যেন পৃ‌থিবীর সব থে‌কে সুন্দর নিয়ম আর সুখ। এটাইত জীবন। ছ‌বির ম‌তো জীবন। যেখা‌নে সবাই সবার সু‌খে দু‌খে, আপ‌দে বিপ‌দে পা‌শে থা‌কে। ‌কিন্তু এটা শুধু ঈ‌দের দি‌‌নে কেন? জীব‌নের প্রত্যেকটা দিন এমন হ‌লে ক‌তোনা ভাল হ‌তো। এই ঈদ আজ সক‌লের ‌শৈশব‌কে ম‌নে ক‌রিয়ে ‌দেয়। চো‌খে জল এ‌নে দেয়। ক‌ষ্টের নয়, এ জল আন‌ন্দের।

   Thank you watching this

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.